ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, আগামী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেজাতীয় সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো দলীয় প্রভাব বা এমপি’র ক্ষমতা খাটানোর বা প্রভার বিস্তারের অভিযোগ উঠলে অথবা এমন কোন তথ্য-প্রমাণ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধিগত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমপি-মন্ত্রীদের জনসভার একই মঞ্চে উপজেলা
নির্বাচনের কোনো প্রার্থী উপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার সকল জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং
অফিসার, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও জেলার নির্বাচনী প্রিজাইডিং অফিসারদের আয়োজিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে
তিনি এসব কথা বলেন। রাশেদা সুলতানা আরো বলেন, জাতীয় ‘সংসদ সদস্যরা এলাকায় অবস্থান করতে পারবেন এবং ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু কোনো নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করতে পারবেন না। এমপি- মন্ত্রীদের জনসভার একই মঞ্চে উপজেলা নির্বাচনের কোনো প্রার্থী উপস্থিত থাকলে তার
বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখবেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। ভোটারই হলো নির্বাচনের প্রাণ। ভোটারদের
উপস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণাসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে সব কিছুই কঠোর হবে কমিশন। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ, শান্তি, শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করা হবে। যতখানি কঠোর হওয়া প্রয়োজন ততখানি হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে শুধু সেনাবাহিনী ছিল এখন শুধু সেনাবাহিনী থাকবে না। জাতীয় নির্বাচনে একসঙ্গে সব কেন্দ্রে ভোট হয়েছে, এখন সব কেন্দ্রে এক সঙ্গে ভোট হচ্ছে
না। কয়েকটি পর্বে ভোট হবে। ফলে নিরাপত্তার জন্য তিন থেকে চারগুণ নিরাপত্তা বাহিনী থাকবে।
রাশেদা সুলতানা আরো বলেন, সম্প্রতি ৭ জানুয়ারি আমরা জাতীয় নির্বাচন করেছি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন আরো বলেছেন, সাংবাদিকদের পরিপত্রে উল্লেখ্য আছে জেলা প্রশাসন বা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের অবগত করা। আপনারা তা করবেন। তবে আপনাদের (সাংবাদিকদের) কোন কাজের জন্য কারোর
কাছে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। সাংবাদিকরা অবশ্যই ভালো ভাবেই পড়ে নেবেন পরিপত্রটি। আর নির্বাচনে কোন সাংবাদিক আহত হলে বা ক্যামেরা ভাংচুর বা লাঞ্ছিত
করা এবং তাদের উপর হামলা বা আক্রমন করা হলে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সাথে সাথে কঠিন ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থাও নেবে। তবে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে
পেশাদারিত্ব এবং সহনশীলতা থাকতে হবে। তবে গণমাধ্যম আমাদের সহযোগিতা করলে অবশ্যই একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব বলেও মনে করেন
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
সভায় অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. জাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি পঙ্কজ দেবনাথ, রংপুর বিভাগের পুলিশ প্রধান উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন, পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো: জহুরুল ইসলাম, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোলায়মান আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রামকৃষ্ণবর্মণসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এর আগে সকালে একই স্থানে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু করা হবে। আর ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে
নির্বাচনে প্রার্থীদের কাজ করতে হবে। ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ উপজেলার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে
অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচটি উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদের প্রার্থীরা অংশ নেন।